মাসাদাইর বাজারে কামাল ভাইয়ের চায়ের দোকান

শেয়ার করুণ

চা ভালোবাসেন না এমন মানুষ বাংলাদেশে খুজে পাওয়া মুশকিল। কলেজ পড়ুয়া ছাত্রের দল, মাঝবয়সী কিংবা বৃদ্ধ সবাই চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে হারিয়ে যান স্থানীয়, জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক রাজনীতির মঞ্চে। সময়ের সাথে সাথে মানুষেত রুচির সাথে সাথে পরিবর্তন এসেছে চায়ের শপগুলোতে। আধুনিকতার ছোয়ায় চায়ের দোকানগুলো এখন কফি শপ।

নগরীর মাসদাইর বাজারে দীর্ঘদিন যাবত চা বিক্রি করে চলছেন কামাল হোসেন। ৫০ বছরের সংগ্রামের জীবনে বহু কাজ করেছেন জীবিকার তাগিদে। কিন্ত শেষমেশ থিতু হয়েছেন চা বিক্রির পেশায়। সারা মাসদাইর বাজার জুড়ে কামাল ভাই হিসেবে পরিচিত তিনি।

১৯৯৮ সাল থেকে শুরু করেছিলেন চায়ের ব্যবসা। এর আগে বিক্রি করেছেন আইসক্রীম, মৌসুমী ফল। কখনো চাকুরী করেছেন হোটেলে,মসজিদে, চালিয়েছেন রিকশাও। ১৯৯৮ সালের বন্যার পর থেকে আর পেশা বদল করেন নি। চা বিক্রি করেই ফিরিয়েছেন নিজের ভাগ্য। নিজের সন্তানদের পড়াশুনা করিয়েছেন, বিয়ে দিয়েছেন। মাসদাইরে নিজের থাকার মত ছোট্ট একটি বাড়িও করেছেন চা বিক্রি করে। কামালের এখন ইচ্ছা একটাই পবিত্র হজ্ব পালন করার। কামাল ভাই আত্মবিশ্বাসী, একদিন ঠিকই ব্যবস্থা হয়ে যাবে হজ্বের।

প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয় কামাল ভাইয়ের চায়ের বেচা বিক্রি। দুধ চা, মালাই চা আর রং চা পাওয়া যায় কামাল ভাইয়ের দোকানে। সব চায়েরই সমান চাহিদা বলে জানালেন কামাল ভাই। তবে তুলনামূলক বেশী চলে দুধ চা। কামাল ভাই সব সময় চেষ্টা করেন বাজারের সেরা উপাদান দিয়ে বানান চা। এলাকার খামার থেকে সংগ্রহ করা খাটি গাভীর দুধ, দেশের স্বনামধন্য ব্র‍্যান্ডের পাতি দিয়ে বানান চা।

প্রতিদিনই কামাল ভাইয়ের দোকানে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে জমে উঠে আড্ডা। বিকাল থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের আড্ডার স্থান হয়ে উঠে কামাল ভাইয়ের দোকান।

কামাল ভাইয়ের দোকানে চা খান নি এমন মানুষ মাসদাইরে খুজে পাওয়া দুষ্কর। কামাল ভাইয়ের দোকানের চা খেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ফুফাতো ভাই আবু হাসনাত আব্দুল্লাহ, বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু। এই তালিকায় আছেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও শামীম ওসমান। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের রাজনৈতিক আড্ডার আরেক ঠিকানার নাম কামাল ভাইয়ের চায়ের দোকান।

নিউজটি শেয়ার করুণ