মাসদাইর শ্মশান ঘাট, অপরাধীদের অভয়ারণ্য

শেয়ার করুণ

উজ্জিবীত বাংলাদেশঃ শহরের মাসদাইর এলাকায় অবস্থিত পৌর শ্মশান ঘাট এখন ভ্রাম্যমান অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিনতহয়েছে।গভীর রাতে শ্মশান ঘাট থাকে অন্ধকারআচ্ছন্ন। ভেতরের পরিবেশ ভুতুরে অনেকটাই।

রাতযতো গভীর হয়, শ্মশানের পরিবেশ ততোটাই গাঁছমছমে হয়ে উঠে। সাধারন মানুষের পক্ষে শ্মশানের
ভেতরে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। নিরব পরিবেশে রাতভর দল বেঁধে ভ্রাম্যমান অপরাধীরা শ্মশানে
ভেতরে বিভিন্ন স্থানে আড্ডা দেয়। রাস্তার পাশে বা অলিতে-গলিতে ছিনতাই কিংবা চুরি করে শ্মশানের ভেতরে আশ্রয় নিয়ে থাকে এসব অপরাধীরা।

সূত্রমতে, মাসদাইর, তাগারপাড়, চৌধুরী কমপ্লেক্স, বিসিক শিল্পনগরীর অনেক গার্মেন্টস ছুটি হয় রাতে নাইট ডিউটি শেষ করে শ্রমিকরা যখন বাড়ি ফেরে, তখন ছিনতাইকারীরা এসব শ্রমিক, সাধারন পথচারী, বিভিন্ন দুরপাল্লার পরিবহনে আসা যাত্রীসহ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকের চালকদের টার্গেট করে শুরু করে ছিনতাই।
হাতিয়ে নেন সর্বস্ব। এছাড়াও মাদক ব্যবসায়ীরা শ্মশানের ভেতরে অনেকটা নিশ্চিন্তে মাদক বিক্রি ও সেবন করেথাকে। কারন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভেতরে প্রবেশের আগেই আশপাশের বিভিন্ন দেয়াল পাড় হয়ে পালিয়ে যায় এসব মাদক কারবারের
সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সূত্রগুলো জানায়, সিটি কর্পোরেশন শ্মশান ঘার্টকে কেন্দ্র করে ৬টি অপরাধী চক্র সক্রিয় রয়েছে। এদের মধ্যে জন্টু বাহিনী, লিংকন বাহিনী (বাহিনীর প্রধান লিংকন বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে), রাকিব বাহিনী, রিপন ওরফে
পিচ্ছি বাহিনী, নাডা সুমন বাহিনী ও চিল্লা সুমন বাহিনীর অন্যতম। এসব গ্রুপের প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন পেশাদার ছিনতাইকারী শ্মশান ঘাটকে কেন্দ্ৰকরে অপরাধের সম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। এরা দিনের আলোতে আড়ালে থাকলেও সন্ধ্যা হলেই শ্মশান ঘাটে আশ্রয় নেয়। এছাড়াও শ্মশান ঘাটেঅনুষ্ঠিত বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রকাশ্যে মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের হাট বসায় এসব অপরাধীরা।

শ্মশানে আসা দর্শনার্থী-পূণ্যার্থীরা এসব মাদক বিক্রেতার কাছে এক প্রকার জিম্মি। কোন প্রতিবাদ করলেই তারা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদকারীর উপর চালায় হামলা।

এসব অপরাধীদের প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ আছে শ্মশান ঘাট কমিটির গুটি কয়েক ব্যক্তি ও সিটি কর্পোরেশনের নিয়োগ দেয়া পাহাড়াদারদের বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানে জানা যায়, রাত হলেই ছিনতাই চক্রের সদস্যরা শ্মশান ঘাট, কবরস্থানের সামনের সড়ক, মাসদাইর পাকাপুল, সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, ঈদগাহ মাঠের আশপাশের নিরব স্থানে, সরকারি ৭১নং প্রাইমারি স্কুলের সামনে, তালা ফ্যাক্টরির মোড়সহ ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের চাষাঢ়া থেকে পঞ্চবটির বিভিন্ন রাস্তার পাশে উৎপেতে থাকে। তারা সাধারন মানুষ ও শ্রমিকদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে শ্মশানের ভেতরে চলে যায়। শ্মশানের ভেতরে চলে যাওয়ার কারনে এসব অপরাধীদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এ বিষয়ে র‍্যাব ১১’এর কোম্পানী কমান্ডার বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে ছিলো।

আমরা এর আগেও মাসদাইর শ্মশান থেকে অনেক অপরাধীকে আটক করেছি। আমরা আবারো শ্মশান সহ আশপাশের এলাকার অপরাধ দমনে অভিযান চালাবো। উল্লেখ্য, ফতুল্লার মাসদাইর ও তার আশপাশের এলাকার ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জরিতদের আখড়া অথবা আশ্রয়স্থল এখন শ্মশান। সন্ধ্যার পর থেকেই অপরাধীরা শ্মশানের ভেতরে অবস্থান করে। রাত গভীর হলেই তারা মেতে উঠে ছিনতাইয়ে।

নিউজটি শেয়ার করুণ