নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা হয়ে আব্দুল কুদ্দুসের আচার খায় নি এমন মানুষ খুজে পাওয়া দুষ্কর। আমলকী, করমচা, আমড়া, তেতুল, আম কিংবা চালতা সব ধরনের আচারের সমাবেশ কুদ্দুস সাহেবের আচারের দোকানে। নগরীর সায়াম প্লাজার নিচে ছোট একটু জায়গা নিয়ে হরেকপদের আচারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তিনি।
নগরীর নিন্মবিত্ত থকে উচ্চবিত্ত সকল শ্রেনীর মানুষের কাছেই সমান কদর কুদ্দুসের আচারের।আচার খেতে খেতে নাতিদীর্ঘ আলাপচারিতায় জানা গেল তার ব্যবসার নানাদিক নিয়ে। নিচে তুলা ধরা হলো তারই কিছু অংশবিশেষ।
আপনার ব্যবসার শুরু কীভাবে?
নিজের বউয়ের বিয়ের শাড়ী বন্ধক রেখে মাত্র ৩০০ টাকা পুজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করি। আমড়া, জাম্বুরা,পেয়ারা, পানিফল আর জলপাই নিয়ে ব্যবসা শুরু কুদ্দুসের।
মাথায় ডালা নিয়ে হেটে হেটে বিভিন্ন জায়গায় এসব মৌসুমি ফল বিক্রি করতাম।
আচার বিক্রি করতে গিয়ে কোন স্মরনীয় স্মৃতি আছে?
একবার আচার বিক্রি করছিলাম সরকারী তোলরাম কলেজের সামনে। ছাত্রদের দুগ্রুপের মারামারির কারনে আমার সকল ফল আর আচার নষ্ট হয়ে যায়। পুজি হারিয়ে আমি প্রায় দিশে হারা। এমন সময় তৎকালীন ভিপি শামীম ওসমান আমাকে ডেকে পুনরায় ব্যবসার জন্য ১০০০ টাকা দেন।ওই ১০০০ টাকাই আমার বর্তমান ব্যবসার মুলধন।
নারায়ণগঞ্জের কোন অভিজাত পরিবার আপনার আচার নেয় কিনা?
সকল শ্রেনী পেশার মানুষই আমার আচার নেয়। বর্তমান এমপি শামীম ওসমান, প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমান, নাসিম ওসমান পুত্র আজমেরী ওসমান, শাহ নিজাম সহ নারায়ণগঞ্জের অনেক পরিচিত মুখ এখান থেকে আচার কিনে।
প্রধানত কোন শ্রেনির ক্রেতা বেশী আসে আপনার কাছে?
সব শ্রেনীর ক্রেতা আসলেও মহিলা এবং কলেজ ছাত্রীরা বেশী আসে আমার আচার কিনতে। কোন আচারের চাহিদা বেশী? সব ধরনের আচারের চাহিদাই আছে কমবেশী। তবে পাচমিশালী আচারটা একটু বেশী চলে। আম,তেতুল, চালতা, বড়ই দিয়ে বানানো এই আচারের চাহিদাটা বেশী।
বর্তমানে আপনার পুজি কত টাকার?
এটা বলা মুশকিল। তবে ৭- ৮ লাখ টাকার আচার আর কাচামাল আছে আমার বাসায়।
আচারের ব্যবসা নিয়ে ভবিষ্যত কোন পরিকল্পনা আছে? হ্যা আছে।
আগামীতে আচারের একটা নাম করার চিন্তা আছে। সরকারের অনুমতির জন্য চেষ্টা করছি। অনুমতি পেলে সারা দেশে বাজারজাত করার চিন্তা ভাবনা আছে।
বর্তমান প্রজন্মের উদ্যোক্তা কিংবা বেকারদের উদ্দেশ্য কিছু বলুন?
আমাদের দেশে সব ধরনের ব্যবসারই কদর আছে। চাকুরীর পিছনে না ছুটে যে কোন ব্যবসায় মনোনিবেশ করতে পারে তরুনরা। কোন কাজই ছোট নয়। আত্মসম্মানবোধের জন্য কোন কাজ না করার মানসিকতা পরিহার করতে হবে।আপনিও মুখের স্বাদের পরিবর্তন আনতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন কুদ্দুসের আচারের দোকানে। যে কোন আইটেমের আচার খেয়ে হারিয়ে যাবেন অন্য এক জগতে।