নগরীর জামতলা থেকে নাসিমা বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাতে জামতলার মামুন চৌধুরীর বাড়ির চতুর্থ তলা থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহরের জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
নিহতের মা সালেহা বেগম শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে নিহতের স্বামী আলমসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২-৩ জনকে অভিযুক্ত করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলার অভিযুক্ত এজাহার নামীয় আসামী নিহতের স্বামী আলমকে রাতেই পুলিশ গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আলম (৩০) নিলফামারী জেলার সদর থানার রামকলা এলাকার মো. জিন্নাহর ছেলে ও ফতুল্লা মডেল থানার জামতলা শাহিন ডাক্তারের গলির মামুন চৌধুরীর চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া।
নিহত নাসিমা বেগম শরিয়তপুর সদরের আবদুল জলিল ব্যাপারীর মেয়ে। তিনি স্বামী ও সন্তান নিয়ে জামতলায় ভাড়া থাকতেন।
ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক গোলাম সারোয়ার জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে নিহত গৃহবধূ বিষপান করে। বিষয়টি জানতে পেরে তার স্বজনেরা রাত আটটার দিকে প্রথমে খানপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে রাত ৯টার দিকে জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১০টার দিকে সে মারা যায়। পরে লাশ বাসায় নিয়ে আসে। এর আগে বিকেল চারটার দিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোন এক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। এতে করে স্বামী নাসিমাকে চড়-থাপ্পড় মেরে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। পরে নিহত নাসিমা বাসা থেকে বের হয়ে পুনরায় রাত সাড়ে ৬টার দিকে বাসায় ফিরে আসে। ধারণা করা হচ্ছে সে বাইরে থেকেই বিষপান করে বাসায় আসে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সংবাদ পেয়ে রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
নিহতের মা সালেহা বেগম বলেন, পাঁচ বছর পূর্বে নিহত নাসিমার সাথে আলমের বিয়া হয়। তাদের সংসার জীবনে তিন বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এক সময় শ্বশুর-শাাশুড়ির সংসারেই থাকতো। শ্বশুর-শাাশুড়ির সাথে বনিবনা না হওয়ায় গত দেড় মাস যাবৎ তারা বাসা ভাড়া নিয়ে পৃথকভাবে বসবাস শুরু করে। কিন্ত পৃথক হলে স্বামী আগের মতোই সামান্য কিছুতে মারধর করতো। ঘটনার দিনেও নিহতকে তার স্বামী মারধর করেছে বলে দাবি নিহতের মায়ের।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রিজাউল হক জানান, নিহতের স্বামীর আলম পেশায় চা দোকানি। নিহতের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। মামলার এজাহার নামীয় আসামী নিহতের স্বামী আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।
সূত্রঃ নিউজ নারায়ণগঞ্জ