সময়ের নারায়ণগঞ্জঃ চাষাঢ়া থেকে অক্টোঅফিস মোড় পর্যন্ত পুরো এলাকা ছিনতাইকারীদের অভয়ারন্য। এই তথ্য ও সংবাদ নতুন কিছু নয়। শুধুমাত্র এই সড়কটি ঘিরেই একাধিক ছিনতাইকারী সক্রিয় চক্র রয়েছে। এদের মধ্যে কেউ অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই করে, কেউ ধাক্কা দিয়ে ইস্যু তৈরী করে ছিনতাই করে। ঘুরে ফিরে ছিনতাইয়ের অন্যতম অভয়ারন্য হয়ে উঠেছে এই সড়কটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কলেজ রোড থেকে অক্টো অফিস মোড় পর্যন্ত সড়কের
দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার। এইটুকুর মধ্যেই ছিনতাইকারীদের প্রকোপ এতটাই বেশী যে, দিনের বেলাতেও একা একা চলাফেরা করতে ভয় পান সকলেই । খুব সকালে, মধ্য দুপুরে এবং সন্ধার পর থেকে এই সড়কে অহরহ ছিনতাই ঘটতেই থাকে। একাধিকবার এনিয়ে পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলেও কোন অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি।
নতুন করে প্রকাশ্যে ছিনতাইকারীদের হাতে এক ব্যক্তিকে ছিনতাই হতে দেখার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন রিয়াদুর রহমান সাকিব নামে এক ব্যক্তি।
চোখের সামনে ইজিবাইক থামিয়ে ছিনতাই হতে দেখার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
২৫ সেপ্টেম্বর রোববার প্রকাশ করা ওই অভিজ্ঞতায় তিনি লিখেন ‘এইমাত্র
মাসদাইর সামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামের সাথের মেইন রোডে ইসদাইর যাওয়ার রাস্তার মাথায় আমার সামনে ছিনতাই হতে দেখলাম। লোকটির মোবাইল নিয়ে ছিনতাইকারীরা চলে গেলেও তার কোন ক্ষতি করেনি। লোকটি অসহায়ের মত চিৎকার করা ছাড়া কিছুই করতে পারেনি। তিনি একটি মিশুকে করে পঞ্চবটির দিকে যাচ্ছিলেন। পথেই তার গতিরোধ করে ছিনতাই করাহয়।
ছিনতাইকারীদের হাতে ধারালো অস্ত্র থাকায় কেউই সামনে যেতে পারেনি। ছিনতাই হওয়ার পরপরই অনেকক্ষণ তিনি চিৎকার করেছেন কিন্তু ঘটনার আচমকায় কেউই এগিয়ে আসার সময় পায়নি বা আসেনি।’
‘বিগত কয়েক মাসে প্রায় ১০ থেকে ১৫ বার বা আরো বেশি ঈদগাহ্ থেকে
গভঃ গার্লস স্কুল পর্যন্ত এবং ওসমানী স্টেডিয়ামের পাশের রাস্তার বিভিন্ন
জায়গায় ছিনতাই হয়েছে। এর কয়েকটি আমার সামনেই ঘটেছে।
এইব্যাপারে বহু মানুষ ভুক্তভোগী। প্রশাসন এখনো কোন শক্ত ব্যবস্থা না নিলে
আরো বহু মানুষ এর ভুক্তভোগী হবেন। তাই প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন, চাষাঢ়া থেকে পঞ্চবটি ও ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামের রাস্তা ইসদাইর বাজার পর্যন্ত ছিনতাইয়ের ব্যাপারে কঠিন পদক্ষেপ নিয়ে আপনারা আমাদের মুক্তি দিন।
রাতে বাসার নিচে নামতেও ভয় লাগে এখন।’ তার এই লেখা প্রকাশিত হবার পর অনেকেই একমত পোষন করে মন্তব্য
করেন। সুমন নামে এক ব্যক্তি বলেন, কয়েকদিন আগে আমার সামনে একই
স্থানে (সামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামের সাথের মেইন রোডে) হয়েছে ভাই। আমি অল্পের জন্য বেঁচে গেছিলাম।
আনিকা হক নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, রাত সাড়ে ১১ টার দিকে আমাদের
বাসার সামনেও ছিনতাই হয়েছে। কিন্তু বেশী সুবিধা করতে পারেনি, লোকজন ধরে ফেলেছে। পুরো ঘটনা নিজ চোখে দেখলাম। অনেক বেড়ে গেছে এই এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দিনের পর দিন ছিনতাই ঘটে চললেও ফতুল্লা থানা
পুলিশ নির্বিকার। উল্টো কোন কোন ক্ষেত্রে ছিনতাইয়ের মামলা নিতে না চাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে পুরো ইসদাইর মাসদাইর ছিনতাইকারীদের এলাকা হিসেবেই পরিচিত হবে। আর ভুক্তভোগী হতে থাকবে সাধারণ মানুষ।