ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের হাজরাকান্দি এলাকায় পাশবিক নির্যাতনের শিকার এক স্কুলছাত্রীর বিষপানে মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (২৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিম আক্তার (১৫) নামের ওই শিক্ষার্থী মারা যায়।
মিম ওই ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের হাজরাকান্দি এলাকার দিগনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। অভিযোগ উঠেছে, ওই এলাকার রাব্বিসহ তিন যুবক দুই ঘণ্টা ধরে তাকে পাশবিক নির্যাতন চালায়। ধর্ষক রাব্বি পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার ছোট পাইককান্দি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।
নিহত মিমের মামা রবিউল ইসলাম বলেন, গত বুধবার (২৪ আগস্ট) দিনগত রাত ১২টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে বের হয় আমার ভাগ্নি। এ সময় রাব্বিসহ তিন যুবক তাকে মুখ চেপে বাইরে নিয়ে যায়। পরে রাব্বি আড়াই ঘণ্টা ধরে তাকে পাশবিক নির্যাতন চালায়। অন্য দুজন এই কাজে তাকে সহযোগিতা করে।
রবিউল ইসলাম আরও বলেন, মারা যাওয়ার আগে মিম আমাদের জানিয়েছে- রাব্বি নামে এক যুবক তাকে নির্যাতন করেছে। সঙ্গে থাকা অন্য ২ জনকে সে চিনতে পারেনি।
নিহত মিমের বড় বোন সুমি আক্তার জানান, রাব্বি আমার ফুফাতো ভাই। রাব্বি মীমকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় রাব্বি তার বন্ধুদের নিয়ে আমার বোনকে পাশবিক নির্যাতন করে। পাশবিক নির্যাতন এবং অপবাদ সইতে না পেরে ঘরে থাকা বিষ পান করে আমার বোন।
অচেতন অবস্থায় প্রথমে তাকে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বেলা ১১টার দিকে আমার বোন মারা যায়।
এদিকে নিহত ছাত্রীর বাবা রেজাউল মল্লিক বলেন, আমার মেয়েকে ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে বিষ পান করে। এ বিষয়ে আমি ভাঙ্গা থানায় ডিউটি অফিসারের নিকট ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করি। থানা থেকে বলেছে আগে মেয়েকে চিকিৎসা করান। পরে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা আছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।
এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল করিম বলেন, ধর্ষণের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি, তবে বিষপানে মারা গেছেন বলে খবর পেয়েছি। নিহত মেয়েটি এরা মামাতো ফুফাতো ভাইবোন ছিল। সম্ভবত প্রেমঘটিত কারণে বিষপান করেছে। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্রঃ যুগান্তর