সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নূরবাগে জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা দখল করে মেলা বসিয়েছে শাওন-তুষার গং৷ এতে করে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে অবৈধ দোকানগুলোতে জাতীয় সম্পদ বিদ্যুৎ চুরি করে তা সরবরাহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি মেলায় আসা তরুণীদের ইভটিজিংয়ের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নূরবাগের গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়কের প্রায় পুরোটাই দখল করে তথাকথিত হলিডে মেলা বসিয়েছে শাওন ওরফে পাপিষ্ঠ শাওন, তুষার, শাকিল, নাঈম গং। মেলা উপলক্ষে বিগত কয়েকদিন যাবত চলে জোরালো মাইকিং৷ শাহীবাজারের বহুল আলোচিত হলিডে মার্কেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই সুযোগে এই মেলা চালু করা হয়েছে। আর এতে করে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিরও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, মেলার আশেপাশেই বসছে মাদক সেবনের আসর। আয়োজকেরাই সেই আসরের মধ্যমনি। শুধু তাই নয়, মেলায় আগত তরুণী বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন, ইভটিজিংয়ে লিপ্ত থাকছে বখাটেরা। জাতীয় সম্পদ বিদ্যুৎ চুরির মতো ঘটনাও ঘটছে মেলাকে কেন্দ্র করে। অবৈধ দোকানগুলোর বিদ্যুৎ আসছে অবৈধ উপায়ে। আর এতে করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চাঁদাবাজ চক্রটি। প্রতিটি দোকান থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে দেড়শো থেকে দুইশো টাকা। দোকানদারেরা দাবিকৃত টাকা দিতে না চাইলে তাদেরকে প্রকাশ্যে লাঞ্চিত করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন বলেন, এমনিতেই রাস্তাগুলো জরাজীর্ণ। তার উপরে প্রায় পুরো রাস্তা দখল করে অবৈধ মেলা বসিয়েছে চাঁদাবাজ চক্র। বিদ্যুৎও চুরি করছে ওরা। আর ওদের পালিত কিশোর গ্যাংয়ের ইভটিজিংয়ের যন্ত্রণায় আমাদের মেয়েরা রাস্তা দিয়ে হাঁটতেও পারছে না। এ যেন মগের মুল্লুক। আয়োজক শাওন রিহ্যাব ফেরত একজন চিহ্নিত মাদকসেবী। ইয়াবা, ফেনসিডিলে তার আসক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেলে তাকে নিয়মিত বিরতিতে তিনবার মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে রাখা হয়, তবুও সে মাদক ছাড়েনি। এখন নূরবাগে তার তথাকথিত অফিসেই বন্ধুদের নিয়ে চলে মাদক সেবন ও ব্যবসা।
একাধিক সূত্র জানায়, মেলার আয়োজক পাপিষ্ঠ শাওন ও তুষার একসময় যুবদলের রাজনীতিতে সরাসরি জড়িত ছিলেন৷ এমনকি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলন, মিছিলে কুতুবপুরের যুবদল নেতা ইসমাইলের নেতৃত্বে তারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন। (তাদের সেই সকল ছবি আমাদের হাতে সংরক্ষিত রয়েছে।) কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচনের পরেই ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে পরবর্তীতে নিজেদের যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। তবে জনসাধারণের মতে, হালুয়া-রুটির ভাগ পেতেই মূলত ডিগবাজি খেয়েছেন মাদকাসক্তির দায়ে অভিযুক্ত দুই নব্য লীগার।