সংসদ ভবনে তলোয়ার নিয়ে হামলা পরিকল্পনার মামলায় বিতর্কিত ধর্মীয় বক্তা আমির হামজাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
একইসঙ্গে তার দুই সহযোগী মো. আবদুল্লাহ ও আনোয়ার হোসেনকে ৪ দিন করে রিমান্ডে পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
পুলিশের করা রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।
হামজা ও তার দুই সহযোগীকে এদিন আদালতে হাজির করে শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়েছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা সিটিটিসির পরিদর্শক কাজী মিজানুর রহমান।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, “আসামি আমির হামজা এ মামার আসামি আনসার আল ইসলামের সদস্য মো. আল সাকিবসহ অন্যদের তার বক্তৃতার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং হামলার বিষয়ে ইন্ধন দিয়েছেন।
“আসামি আমির হামজার কথিত উগ্রবাদী বক্তব্য ইউটিউবে দেখে এর আগে গ্রেপ্তার আসামি সাকিব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করে পুলিশের গুলিতে শহীদ হবে মর্মে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়, যা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে উঠে এসেছে।”
আবেদনে বলা হয়, “আমির হামজা তথাকথিত জিহাদের নামে পবিত্র কোরআন শরিফ ও হাদিসের অপব্যাখ্যা করে উগ্রবাদী বয়ান দেন এবং যুব সমাজকে উগ্রবাদ সমর্থনে উদ্ধুদ্ধ করেন। এছাড়া উগ্রবাদী বয়ানের ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে উগ্রবাদের প্রচার ও প্রসারে তিনি লিপ্ত রয়েছেন।”
রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড শুনানি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল্লাহ আবু।
অন্যদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী শামসুল ইসলাম আকন্দ ও সাকিল উদ্দিন রিমান্ডের বিরোধিতা করেন।
শুনানি শেষে বিচারক আমির হামজকে ৫ দিন এবং বাকি দুজনকে ৪ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বলে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকতা উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান।
সোমবার বিকেলে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের ডাবিরাভিটায় অভিযান চালিয়ে হামজাকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি।
গত ৫ মে ঢাকার সংসদ ভবন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার আবু সাকিব নামের এক তরুণ পুলিশকে আমির হামজার ওয়াজের বিষয়ে তথ্য দেন।
পুলিশ বলছে, আবু সাকিব নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য। উগ্রবাদী ওয়াজ শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি ‘তলোয়ার নিয়ে সংসদ ভবনে হামলার’ পরিকল্পনা করছিলেন।
সাকিবকে গ্রেপ্তার করার পর তার বক্তব্যের ভিত্তিতে রাজবাড়ী থেকে আলী হাসান ওসামা নামে আরেক উগ্রবাদী বক্তাকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। পরে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
শেরে-বাংলা নগর থানায় সাকিবের বিরুদ্ধে দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলাতেও আমির হামজার কথা বলা হয়েছিল।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাকিব মোবাইল ফোনে নিয়মিত আলী হাসান ওসামা, মাহমুদুল হাসান গুনবী, আমির হামজা, হারুণ ইজহারের ওয়াজ শুনতেন। সেসব ওয়াজে যেসব বার্তা প্রচার করা হত, তাতেই তিনি উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হন।
সূত্র: বিডি নিউজ ২৪